স্বাভাবিক সময়ে কার্যক্রম
ক) স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর স্বেচ্ছাসেবকগণ স্থানীয়ভাবে বসবাস করে বিধায় তারা ঘূর্ণিঝড়জনিত দুর্যোগ মোকাবেলা এবং প্রস্ত্ততিমূলক কার্যক্রম গ্রহনের জন্য স্থানীয় জনসাধারনকে সচেতন করে থাকেন।
খ) ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক মাঠ মহড়া
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর স্বেচ্ছাসেবকগণ স্থানীয়ভাবে জনসাধারণের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক মাঠ মহড়ার আয়োজন করে থাকে। উক্ত মাঠ মহড়া কয়েক হাজার লোক প্রত্যক্ষ করে থাকে এবং এ বিষয়ে তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
গ) ফিল্ম/ ভিডিও প্রদর্শন
স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে দুর্যোগ সম্পর্কিত বিভিন্ন ফিল্ম/ ভিডিও শো প্রদর্শন করেও জনসাধারণকে সচেতন করে থাকে। উল্লিখিত ফিল্ম/ ভিডিও শো গুলো প্রধানত দুর্যোগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ধারনা প্রদানের জন্য আয়োজন করা হয়ে থাকে।
ঘ) প্রচার প্রচারনা
ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের পূর্বে ঘূর্ণিঝড়জনিত দুর্যোগ মোকাবেলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্যে ইউনিয়ন ভিত্তিক র্যালীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। উক্ত র্যালীতে স্থানীয় জনসাধারণ, স্বেচ্ছাসেবক, স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রী এবং বিভিন্ন এনজিওর কর্মীরাও অংশগ্রহণ করে থাকেন।
ঙ) পোষ্টার/ রিফলেট/ বুকলেটস
ঘূর্ণিঝড়জনিত দুর্যোগের এবং প্রস্ত্ততিমূলক কার্যক্রমের আকর্ষনীয় পোষ্টার, লিফলেট, বুকলেটসমূহ স্থানীয় জনসাধারন, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সরকারী বেসরকারী অফিস আদালত এ কর্মরত লোকদের মাঝে বিতরণ করা। এ সকল পোষ্টার, লিফলেট, বুকলেটসমূহ দেখে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়জনতি দুর্যোগ মোকাবেলার সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
চ) মঞ্চ নাটক
ঘূর্ণিঝড়জনিত দুর্যোগের উপর বিশেষ নাটক লেখা এবং প্রস্ত্ততিমূলক কার্যক্রম বিষয়ে লিখিত নাটকটি স্থানীয় বাজারে ষ্ট্রেজিং ড্রামার মাধ্যমে দেখানো হয় এবং এ দেখে স্থানীয় জনসাধারণ এর গুরম্নত্ব উপলব্ধি বৃদ্ধি পায়।
ছ) ঘূর্ণিঝড়ের উপর জারিগান
ঘূর্ণিঝড়ের উপর প্রস্ত্ততিমূলক কার্যক্রম স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষ ধরণের জারিগানের অনুষ্ঠান আয়োজন করে জনসাধারণকে দুর্যোগ মোকাবেলার সচেতন করা হয়ে থাকে।
জ) স্বেচ্ছাসেবক র্যালী
দুইটি ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের পূর্বে ( এপ্রিল- মে এবং অক্টোবর- নভেম্বর) সিপিপি উপকহলীয় এলাকার তীর্ণমূল পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক র্যালী আয়োজন করা হয়ে থাকে। র্যালীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের পূর্বে আয়োজন করা হলে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব হয়ে থাকে।
ঝ) প্রশিক্ষণ/ সেমিনার/ স্বেচ্ছাসেবক ওয়ার্কসপ, সরকারী বেসরকারী অফিসিয়াল/ কমিউনিটি পিপলস
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচী ( সিপিপি) দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে থাকে, সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ের অফিসিয়াল/ ওয়ার্কার, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষক, জেলে, মসজিদের ঈমামদের নিয়ে বিভিন্ন সেমিনার বা ওয়ার্কসপ এর আয়োজন করে থাকে। ফলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দুর্যোগের উপর মৌলিক প্রশিক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিৎসা, উদ্ধার ও অনুসন্ধান বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। নিম্মে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের বিবরণ দেয়া হলোঃ-
১। স্বেবচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ
স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উপর মৌলিক প্রশিক্ষণ, প্রাথমিক চিকৎসা, উদ্ধার ও অনুসন্ধান, লিডারশীপ প্রশিক্ষণ, ঘূর্ণিঝড়, ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত, জলবাযূ পরিবর্তন, মানবকি মূল্যবোধ, জেনডার, রিলিফ অপারেশন এবং সমাজ কল্যানমূলক কার্যক্রমের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে।
The important trainings are details in the below.
B 10.1. Basic Training on disaster Management
B 10.2 First aid Training
B 10.3 Search & Rescue Training
B 10.4 Leadership Training.
মৌলিক প্রশিক্ষণ
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য মৌলিক প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরম্নত্ব দেয়া হয়ে থাকে। উক্ত প্রশিক্ষণে ঘূর্ণিঝড়ের পরিচিতি, শ্রেনী বিভাগ, সংকেত, স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, সিপিপি পরিচিতি, রেডক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট মুভমেন্ট, সংকেত প্রচার পদ্ধতি, দুর্যোগ বিষয়ক স্থানীয় আদেশাবলী, দুর্যোগ বিষয়ক কমিটি, ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক, ইউনিট, ইউনিয়ন, উপজেলা কমিটির কার্যাবলী সম্পর্কে বিশেষ ধারনা প্রদান করা হয়ে থাকে।
প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর প্রাথমিক চিকিৎসা বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। উক্ত প্রশিক্ষণে প্রাথমিক চিকিৎসা কি, এর উদ্দেশ্য, সিপিআর পদ্ধতিতে শ্বাস প্রশ্বাস প্রদান, হাড় ভাঙ্গার প্রাথমিক চিকিৎসা, বিষ ক্রিয়া, শক, আগুনে পোড়া, জলে ডোবা, বৈদ্যুতিক সট ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান সহ হাতে কলমে প্রশিক্ষন দেয়া হয়।
অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ক প্রশিক্ষণ
ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। উক্ত প্রশিক্ষণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ে দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে আহত এবং ক্ষতিগ্রসত্ম জনসাধারণকে কিভাবে সহায়তা প্রদান করা যায় সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। সে সময়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ক একটি গ্রুম্নপ টিম মাঠ পর্যায়ে প্রেরণ করা হয়ে থাকে। ভূমিকম্প, ভুমিধস, সুনামী, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে সিপিপি কিভাবে সাড়া প্রদান কওে থাকে সে বিষয়েও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এই প্রশিক্ষণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ে জরিপ, স্ট্রেচার বহন করা, লেডার, লেসিং নদী বা সমুদ্রে নিরাপত্তা সংক্রামত্ম বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ প্রশিক্ষনে কিভাবে পানি থেকে উদ্ধার করা হয় এবং গাছ ও বহুতল ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়ে থাকে তার উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। বাসত্মব মহড়ার মাধ্যমে হাতে কলমে ৩ দিন ব্যাপী এ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণঃ
সিপিপির কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ের ইউনিট লেভেল পর্যমত্ম বিসত্মৃত। ঘূর্ণিঝড় প্রস্ত্ততি কর্মসূচীর মাঠ পর্যায়ের প্রতিটি ইউনিটে ১৫ জন করে স্বেচ্চাসেবক রয়েছে। প্রতিটি ইউনিটে ১ জন ইউনিট টিম লীডার রয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে একজন ইউনিয়ন টিম লীডার, উপজেলা পর্যায়ে একজন উপজেলা টিম লীডার রয়েছে। এ সকল টিমলীডারগণ স্বেচ্ছাসেবকদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। সে কারণে একজন ইউনিট টিম লীডারকে ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবককে পরিচালনা ও নেত্বৃত্ব প্রদান করতে হয়। ইউনিয়ন টিম লীডারকে ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিতে হয়। অণুরূপভাবে উপজেলা টিম লীডারকে উপজেলা পর্যায়ে নেত্বত্ব দিতে হয়। যার প্রেক্ষিতে এ সকল টিম লীডারদেরকে দক্ষ দল নেতা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদেরকে লীডারশীপ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে নেতা নেতৃত্ব, যোগ্যতা, বিভিন্ন প্রকারের দুর্যোগ, ঝুঁকি হ্রাস, ঝুঁকি নিরম্নপণ, সিপিপি ইউনিট এর কার্যাবলী পুনগঠন, সাংকেতিক যন্ত্রপাতি ও স্বেচ্ছাসেবক গিয়ার রক্ষণাবেক্ষণ, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি নিরম্নপণ, হাজার্ড ম্যাপ, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে ৩ দিনের এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে।
এছাড়া স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মসজিদের ঈমাম, স্কুল শিক্ষক , স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী, জেলে , ইউনিয়ন/ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দদেরকে দুর্যোগ ও সংকেত সম্পর্কে প্রশিক্ষন/ ওয়ার্কসপ করা হয়ে থাকে।